ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম মুক্তির ধর্ম। মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান দিতে পারে বলেই এই জীবনব্যবস্থা সব যুগের সকল মানুষের জন্য উপযোগী।
সম্প্রতি চীন থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে বিষাক্ত ভাইরাস ‘করোনা’। যে ভাইরাসের সাথে কিছুদিন আগেও মানুষ পরিচিত ছিলো না
আল্লাহ তায়ালা বলেন
মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলভাগে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদের কিছু কিছু কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান যাতে তারা ফিরে আসে
( সুরা রুম আয়াত ৪১)
ব্যাপক হারে মানুষ আল্লাহ তাআলার অবাধ্য হলে আল্লাহ পাক পৃথিবীতে গজব নাজিল করেন; যাতে মানুষ তাদের ভুল বুঝতে পেরে তাওবার মাধ্যমে আবার ফিরে আসতে পারে। এই গজব বা মহামারি আসলে তখন করণীয় কী? ইসলামে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। যে কোন মহামারি থেকে বাঁচতে প্রথম ও প্রধান করণীয় হচ্ছে- নিজেদের কৃতকর্ম থেকে তাওবা করা এবং বেশি বেশি ইস্তেগফার করা।
এই মুহূর্তে আমাদের সবার উচিত, মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা। সর্বদা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকা। এবং সাস্থবিধি মেনে চলা।
মহামারি প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটি আল্লাহর গজব বা শাস্তি, বনি ইসরাঈলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল, তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামারি। অতএব, কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস : ১০৬৫)
তাই আমাদের উচিত, যেখানে এ ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দেবে, সেখানে যাতায়াত থেকে বিরত থাকা। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ সরকারিভাবে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে যাতায়াতে সতর্কতা জারি করেছে। যেহেতু চিকিৎসকদের মতে এ ভাইরাসটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণত ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো তীব্র নিউমোনিয়া সিনড্রোমের মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায়।
মহামারি আল্লাহর গজব হলেও এতে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে পাপী-জাহান্নামি মনে করা যাবে না। রাসুল (সা.)-এর ভাষায় মহামারিতে মারা যাওয়া ব্যক্তিও শহীদ। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় আমাদের সমাজের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন, মানুষ যেমন তার লাশের সাথে অমানবিক আচরণ করে তেমনি তার জীবিত আত্বীয় স্বজনের সাথে ও করে যা মোটেই কাম্য নয়। কারণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা স্পষ্ট ভাষায় বলেন মৃত ব্যাক্তির শরীরে ৩ ঘন্টার পর সেই ভাইরাস থাকতে পারে না,সুতরাং আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার সাথে প্রত্যেকের ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী মৃতব্যক্তির শেষ সমাধি করা।
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে ‘বিসমিল্লা-হিল্লাজী লা ইয়াদ্বুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়াহুয়াস সামী‘উল আলীম’, অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে, যাঁর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী’; সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৮৮)
এছাড়া নবিজি (সা.) মহামারি থেকে বাঁচতে বেশি বেশি এই দোয়া পড়তে বলেছেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুযামি,ওয়া সাইয়ি ইল আসক্কাম’।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন