এক দেশে এক রাজা ছিলো, তার একটি কন্যা ছিলো।
তার বিবাহের বয়স অনেক কিন্তু রাজকন্যার বিবাহ সে কারো সাথে দিতে চাইতোনা।কারন সে ভাবতো তার সমান কোনো রাজা নেই, এই পাগলামির কারনো সে বড় বড় অনেক রাজার বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতো।
হঠাৎ সে দেশে একদিন প্রচন্ড ঝড় তুফান শুরু হলো বাতাসের গতি এত তীব্র ছিলো যে রাজার সুরক্ষিত ঘরের চাদে এক নেংটি পরা মুচির ছেলেকে তুলে রেখে দিলো।
ঝড় থামার পর সেই ছেলেকে দেখে সবাই অবাক!!!! এত সংরক্ষিত সিঁড়ি বিহীন চাঁদে তো কোন সাধারণ মানুষ সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়,
রাজা সকল পন্ডিতদের ডেকে তার রহস্য উদ্ঘাটন করার আদেশ জারি করলেন।
পন্ডিতরা অনেক চিন্তা গবেষণা করে উত্তর দিলো যে এটা এক গায়েবি মানুষ। রাজকন্যার সাথে বিবাহের জন্য তাকে আসমান থেকে পাঠানো হয়েছে।
যখন দৃশমান এ জগতে কোনো যোগ্য পাত্র পাওয়া যায়নি তাই তাকে গায়েবি জগৎ থেকে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘোষণা রাজার পছন্দ হয়েছে, তখন রাজা হুকুম দিলেন তাকে গরম পানিতে চন্দনের পানি দিয়ে গোসল করাও, যখন গোসল করানোর জন্য সবাই ধরলো তখন সে চিৎকার দিতে লাগলো।
রাজা পন্ডিতদের জিজ্ঞেস করলো চিৎকার করতেছে কেন, তাঁরা বললো সে আলমে গায়বের মানুষ এখনো আমাদের এ জগতের সাথে পরিচিত হয় নি তাই।
তারপর যখন তাকে মেসক, গোলাপ, আন্মর,জাপরান ইত্যাদি সুগন্ধি মাখানো হলো সে বললো দুর্গন্ধে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আমাকে ছেড়ে দাও।
রাজা জিজ্ঞেস করলো ছেলেটি এরুকম বকছে কেন??
তাঁরা বললো পৃথিবীর সুগন্ধি তার অপরিচিত তার অস্বস্তি লাগছে, এখানকার আলো বাতাসে অব্যস্ত হয়ে গেলে সুগন্ধি ও তার কাছে ভালো লাগাবে।
তার সামনে দামী হীরা জহরত মণিমুক্তা রাখা হলো সে বললো এগুলো আগুনের কয়লা আমাকে পুড়ে মারার জন্য। চিৎকার শুরু করে দিলো।
তারপর তার সামনে রাজকন্যাকে সুন্দর পোশাক আর রাজকীয় মণি মুক্তা ও সোনার অলংকারে সাজিয়ে তার সামনে আনা হলো,
রাজকন্যার সারা দেহে মুল্যবান মণিমুক্তায় ঝলমল করেছে, তাই দেখে মুছির ছেলে বলতে লাগল এই ডাইনির দেহের আগুনে পুরে আমি চারখার হয়ে যাবো, তোমরা আমাকে বাচাও,এই ডাইনি আমাকে খেয়ে ফেলবে!!!
সে মৃত্যু মুখে পতিত হওয়া ব্যাক্তির ন্যায় গেঙডাতে লাগলো।
এ অবস্থা দেখে পন্ডিতরা রাজাকে পরামর্শ দিলো যে সে আলমে গায়েবের মানুষ যখন দুনিয়ায় এসেছে দুনিয়াতেই থেকে যাবে,এখন তাকে দুনিয়ার মানুষের সাথে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করার সুযোগ দেয়ার দরকার, শিঘ্রি এই দুনিয়ার মানুষের সাথে তার ভাব হয়ে যাবে। ,
তখন তার সাথে রাজকন্যার বিবাহ দেয়া হবে,
অতঃপর তাঁকে মুক্ত করে দেয়া হলো, তখন সে রাজকীয় পোশাক খুলে ফেলে দিয়ে তার নেংটি পরে দৌড়ে সোজা বাড়িতে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে সব ঘটনা বললো, যে আমাকে ডাকাত রা ধরে নিয়ে প্রথমে একটা খোফের মধ্যে আটকে রেখে মাথায় গরম পানি ঢেলে মেরে ফেলতে চেয়েছে কিন্তু আমি মরি নাই। এরপর জলন্ত আগুনের কয়লা তারপর একটি ডাইনি আসার কাছে পাঠিয়েছে তার সারা শরীরে আগুন দপদপ করছিলো,সে ডাইনি আমাকে খেয়ে ফেলার জন্য আমার দিকে এগিয়ে এসেছিলো কিন্তু আমাকে ধরতে পারে নাই আমি দৌড়ে চলে এসেছি।
শরিয়ত হলো এমনই এক সুন্দর ও সহজ ব্যাবস্থা যার মধ্যে মানুষের আরাম আয়েশের জন্য এবং যাবতীয় সব কিছু রয়েছে।
সবকিছুরই বিধান রয়েছে, কিন্তু আজকাল এত সুন্দর আশ্রয়টিকে মানুষ অবহেলা করছে।
আসলে তাদের রুচির বিকৃতি ঘটেছে ভালো জিনিস তারা চিনতে পারে না, ঠিক উপরে ঘটনায় মুচির ছেলের মতো।
এই চামারের ছেলের যেমন রুচির বিকৃতি ঘটেছে, তেমনি আজকাল অনেকের রুচির বিকৃতি ঘটেছে, তাই রাজকুমারীর চেয়েও অপরুপ সুন্দর শরিয়তকে ডাইনি ভেবে ফালিয়ে যাচ্ছে।
অথচ শরিয়তের যে দিকটাতে তাকাই তাঁর মনোরম আঁচলখানি অন্তর কেড়ে নেয়। যেন এটাই আমার আশ্রয়।
হে আল্লাহ আমাদের সকলকে মৃত্যু পর্যন্ত সহীহ দ্বীনের উপর অটল থাকার তাওফিক দান কর। আমীন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন