অর্জিত ইলেমকে যদি কর্মের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায় তবে সে জীবন সার্থক ও ধন্য।
হযরত মাওলানা রুহুল আমিন সাহেব রহঃ ছিলেন এমনই এক সার্থক ও ধন্য জীবনের অধিকারি এক মহাপুরুষ।
জন্ম ও পরিচয়।
রাহবারে শরিয়ত ও ত্বরিকত হযরত মাওলানা রুহুল আমিন সাহেব রহঃ আনুমানিক ১৯২৩ ইং সালে ফেনী জেলার সুনামধন্য লেমুয়া ইউনিয়ন ধর্মপুর গ্রামে, এক সম্ভ্রান্ত পরিবার এবং এক খোদাভীরু আলেম মাওলানা খলিলুর রহমানের ওরশে জন্ম গ্রহণ করেন।
শিক্ষাকাল
শিশু রুহুল আমিন দ্বীনি শিক্ষার প্রতি অত্যান্ত অনুরাগী ছিলাম যার ফলে প্রাথমিক শিক্ষা স্থানীয় মিয়াজি সাহেবের নিকট করলেও পরবর্তীতে মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করার নিমিত্তে সোনাগাজি বক্তার মুন্সি মাদ্রাসায় ভর্তি হন সেখানে অত্যান্ত কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন, এরপর সোনাগাজি ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন,
কর্মকাল
পড়া লেখা সমাপ্তি করে তখনকার যুগশ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন ওলিকুলের শিরোমণি পটিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হজরত মাওলানা মুফতি আজিজুল হক সাহেবের সোহবতে গিয়ে নিজের ঈমান আক্বিদা ও আত্মার পরিশুদ্ধি করেন অতঃপর হযরতের হুকুমে নিজের পাশের গ্রামে রহিম পুর আরাবিয়া মাদ্রাসায় সর্বপ্রথম শিক্ষা দানের কাজে নিয়োজিত হন।
সেখানে দীর্ঘদিন যাবৎ তালিম তারবিয়ত ও খেদমত সুনামের সাথে আঞ্জাম দেন,
পরবর্তীতে নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন ধর্মপুর দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা,
মৃত্যু পর্যন্ত উক্ত মাদ্রাসায় এলমে ওহীর বানী প্রচার করছেন, যাঁর মেহনতের ফলে আজ হাঁটি হাঁটি পাঁ পাঁ করে মাদ্রাসাটি সুনামের সাথে আজঅবদি ইলেম ওহির খেদমত দিয়ে যাচ্ছে। শত শত আলেম ওলামা মুফতি মুহাদ্দিস তৈরি হয়ে দেশ বিদেশে সুনাম ধন্য প্রতিষ্ঠানে খেদমতে নিয়োজিত আছে।
এই মনিষী ইলমে জাহেরির পাশাপাশি আদ্ধাতিক জ্ঞান গরিমায় ও ছিলেন অনন্য, তার প্রথম শায়েখ মুফতি আজিজুল হক সাহেব রহঃ এর এন্তাকালের পর তৎকালীন যুগের আরেক নক্ষত্র জাতির রাহবর কুতুবুল আলম হযরত শাহ সোলতান আহমাদ নানু পুরি রহঃ এর হাতে বাইআত হয়ে সবক আদায়ের মাধ্যমে রিয়াযত মুজাহাদা করেন, এবং মৃত্যু পর্যন্ত সমাজ থেকে বেদআত শিরিকের মূলোৎপাটন করে সমাজে সুন্নতের আমল এবং হক্ব আক্বিদা বাস্তবায়নে ছিলেন নজির বিহীন , এবং শেষ বয়সে ও কোনো অন্যায় দেখে চুপ থাকতেন না।
হযরতের একটা প্রসিদ্ধ উক্তি ছিলো লাঠির দ্বারা ফয়সালা হবে
কেরামত।
হক্কানি ওলি-আউলিয়াদের কারামাত সত্য
যা কুরআন হাদিস দ্বারা প্রমানিত।
আমি ( মোঃ ইব্রাহিম) একদিন
বর্তমান মুহতামিম হযরত মাওলানা ইলিয়াস সাহেব দাঃবাঃ এর সোহবতে থাকাকালীন হযরত মাদ্রাসার বিভিন্ন দিক আলোচনার মাঝে বলেন,
নিজের অবিজ্ঞাতার কথা, যে একদিন ভাদাদিয়া মাদ্রাসার মাহফিলে মরহুম হজরত সহ আরো অনেকে সেখানে ছিলেন, সকলের ধারণা তিনি মাদ্রাসায় ( ভাদাদিয়া) থেকে গিয়েছেন কারণ তিনি ঐ রাতে মাদ্রাসায় ( ধর্মপুর) ছিলেন না । ফজরের নামাজের সময় হঠাৎ জামাতে শরিক হলেন, উপস্থিত সকলেই আশ্চর্য?? কারণ তারা খোঁজ নিয়ে দেখলেন হজরত রাতে বাড়িতে ও ছিলেন না,আর এত রাতে ভাদাদিয়া থেকে পাঁয়ে হেটে ও নদী পার হয়ে আসা ও সম্ভব নয়, বিষয় টা সকলকে হতবাক করে দিলো,
হুজুর ( মাও. ইলিয়াস সাহেব) বলেন তারপর ও আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে,
একদিন যখন ভাদাদিয়া যাই তখন বিষয়টি নিয়ে মাওলানা আব্দুল মান্নান সাহেবের সাথে আলোচনা করলে উনি বলেন আমি সয়ং নিজে তাঁকে ভোর রাতে এখানেই দেখেছি কিন্তু ওখানে কিভাবে গেলো??
তখনই বুঝতে পারলাম আল্লাহর খাছ ওলিদের থেকে এভাবেই কারামত প্রকাশ পায়।
এই মহান মনিষী ১৯৮৮ ইং সালে কালের আবর্তনে বাস্তবতার তাগিদে মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে রফিকে আলার সান্যিদ্ধে চলে যান। ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন